মির্জা মাহামুদ হোসেন রন্টু:
ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে আগামী ২১ মে নড়াইল সদর ও লোহাগড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে প্রার্থীরা শেষ করেছেন প্রচার প্রচারনা। ভাট প্রদানের অপেক্ষায় রয়েছেন ভোটাররা।
সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে তিন প্রার্থী থাকলেও ভোটের মাঠে রয়েছেন ৭ বারের ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি প্রবীন মোঃ আজিজুর রহমান ভূইয়া ও সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নবীন তোফায়েল মাহমুদ।
চন্ডীবরপুর ইউনিয়নের ৭ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মোঃ আজিজুর রহমান ভূইয়া আনারস মার্কা প্রতীকে ও ভাইস চেয়ারম্যান ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি তোফায়েল মাহমুদ ঘোড়া মার্কা প্রতীকে লড়ছেন।
এবারের নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না থাকায় প্রতিদ্বন্দীতা হবে মূলত আওয়ামীলীগের সাথে আওয়ামীলীগের। নির্বাচনী আচরন বিধিমালায় সংসদ সদস্যদের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রচার প্রচারনার সুযোগ না থাকলেও মোঃ আজিজুর রহমান ভূইয়া জাতীয় সংসদের হুইপ ও নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মোর্তজার আর্শিবাদপুষ্ঠ ও তোফায়েল মাহমুদ নড়াইল-১ আসনের সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তি আর্শিবাদপুষ্ঠ বলে গুঞ্জন রয়েছে।
জেলা আওয়ামীলীগের অধিকাংশ প্রবীন নেতারা প্রকাশ্যে আজিজুর রহমান ভূইয়ার পক্ষে মাঠে কাজ করেছেন অন্য দিকে জেলা আওয়ামীলীগের অপর নেতারা অনেকটা নিরবে তোফায়েল মাহমুদের পক্ষে কাজ করেছেন। তবে নির্বাচনে এই দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভবনা রয়েছে।
তুলারামপুর ইউনিয়নের জিল্লুর রহমান বিশ্বাস বলেন, এবারের নির্বাচনে প্রতীক উন্মুক্ত করায় স্বাচ্ছন্দে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারব।
মোঃ আজিজুর রহমান ভূইয়া বলেন, আমি চন্ডীবরপুর ইউনিয়নের ৭ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও জেলা ইউপি চেয়ারম্যান সমিতিতে সভাপতি হিসেবে ১৫ বছর ও ইউপি চেয়ারম্যান সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটিতে সহ-সভাপতি হিসেবে ১০ বছর দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমি নির্বাচিত হলে চেষ্টা করব সদর উপজেলাকে দূনীতিমুক্ত,মাদকমুক্ত,সন্ত্রাসমুক্ত হিসেবে গড়ে তুলতে এবং জনগণকে নিয়ে একসাথে উন্নয়নমূলক কাজ করব।
তোফায়েল মাহমুদ বলেন,আমি নির্বাচিত হলে তরুনদের জন্য ফ্রিলানসিং ট্রেনিং সহ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করব এবং সরকারি যে সামজিক বেষ্টনিগুলো আছে সেগুলো সঠিকভাবে বন্টন করব। বিগত ৫ বছর ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে সততা ও সুনামের সাথে জনগণের সেবা করেছি।
নড়াইল সদর উপজেলায় মোট – ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দীতা করছেন, চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান ২ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দীতা করছেন। মোট ভোটার দুই লাখ ৪১ হাজার ৭৬০ জন।
অন্যদিকে ,লোহাগড়া উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দীতা করছেন।তবে লড়াই হবে উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান শিকদার আব্দুল হান্নান রুনু (হেলিকপ্টার প্রতীক) ও এস এম ফয়জুল হক রোম (আনারস প্রতীক) এর মধ্যে ।
শিকদার আব্দুল হান্নান রুনু বলেন,আমি রাজনীতির পাশাপাশি মানবসেবায় জীবনকে উৎস্বর্গ করেছি। গত নির্বাচনে মানুষ আমাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছিলেন। আমার সাধ্যমত জনগণের সেবা করেছি। উপজেলার তৃণমূল পর্যায়ে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এবারো মানুষের কাছে ভোট প্রার্থনা করছি।
ফয়জুল হক রোম বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে যা কিছু করণীয় তা নির্বাচনী ইস্তেহারে উল্লেখ করেছি । আমার চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। এলাকার উন্নয়নে জীবনকে উৎস্বর্গ করতে চাই। আমি মানুষের ভালোবাসা নিয়ে নির্বাচনে জয়ী হতে চাই। উপজেলাকে মডেল এবং স্মার্ট হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
লোহাগড়া উপজেলা নির্বাচনে মোট ১৫জন প্রার্থী প্রতিদন্দিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ৩ জন পদে প্রতিদ্বন্দীতা করছেন। মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ১০ হাজার ৭৭০ জন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও রিটানিং কর্মকর্তা (নড়াইল সদর ও লোহাগড়া) শাশ্বতী শীল বলেন, ইতিমধ্যে দুটি উপজেলার প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারদের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মেনে আমরা শতভাগ ভালো নির্বাচন করার ব্যাপারে বদ্ধপরিকর।